ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার ছাত্রসমাজ, ভারতের বিভিন্ন বাঁধ খুলে দেওয়ায় দক্ষিণবঙ্গের ফেনী জেলা সহ নোয়াখালী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর জেলায় আকস্মিক বন্যা সৃষ্টি হওয়ায় সেখানে মানুষ যে দুর্দশাগ্রস্ত হয়েছে, সেই দুর্দশা কিছুটা লাঘবের জন্য হরিপুরের বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষের কাছে আর্থিক ডোনেশন সংগ্রহ করছেন।
হরিপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নেই তারা তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। বিশেষ করে যে বড় বড় বাজার গুলো রয়েছে সে বাজারগুলোতে দোকানদার, ব্যবসায়ী, কাস্টমার এবং অন্যান্য পেশাজীবী মানুষের কাছেও তারা এই আর্থিক ডোনেশন সংগ্রহ করছেন।
অত্যন্ত প্রত্যন্ত অঞ্চল হলেও হরিপুরবাসীর ছাত্র সমাজ জাতির বিপদে আপদে সব সময় ঝাঁপিয়ে পড়েন। গত করোনা মহামারিতে হরিপুরের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন নানা ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছিল। মানুষকে সচেতন করা, মানুষের মাঝে খাদ্য ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা, সরকার কর্তৃক বিভিন্ন অনুদান গুলো দুস্থ অসহায় মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া, এছাড়াও বিভিন্ন মানবিক কার্যক্রমে আমরা তাদেরকে সব সময় সরব দেখেছি।জাতির বিপদে নিজেদেরকে সবসময় উজাড় করে দেওয়ার চেষ্টা করেন হরিপুরের ছাত্রসমাজ। তারই ধারাবাহিকতায় এবছর তারা বন্যার্তদের জন্য ফান্ড কালেকশনে নেমেছেন।
হরিপুরে বড় আকারে ফান্ড কালেকশনের চেষ্টা করছেন “বন্যার্তদের সাহায্যে হরিপুর” নামক একটি ফেসবুক গ্রুপ। এছাড়াও গ্রুপের সদস্যগণ প্রাণপণে চেষ্টা করছেন এখান থেকে যেন একটি বড় এমাউন্ট কালেকশন করা সম্ভব হয়। তারা হরিপুরের বিভিন্ন বাজার ও প্রতিষ্ঠান থেকে বেশ কিছু ফান্ড কালেকশন করেছেন, তারা গত ২৩ তারিখে প্রায় ২৫২৭৭ টাকা, ২৪ তারিখে প্রায় ৬৫৫২ টাকা এবং গতকাল ২৫ তারিখে প্রায় ২৬১০১ টাকা, মোট ৫৭ হাজার ৯ শত ৩০ টাকার মত ফাণ্ড কালেকশন হয়েছে।
এছাড়াও হরিপুরের বেশ কিছু মানবিক ছাত্র ও জনতা তাদের নিজ প্রচেষ্টা এবং উদ্যোগে বেশকিছু ফান্ড কালেকশন করছেন, চৌরঙ্গী বাজারের একটি ছাত্র ও জনতা গ্রুপ নিরলসভাবে চেষ্টা করছেন ফান্ড কালেকশনের। তারা প্রতিদিন যে ফান্ড কালেকশন হয় সেটি আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনে বিকাশ/নগদের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন।
হরিপুর উপজেলায় বৃহত্তর একটি বাজার রয়েছে যা “যাদুরানী হাট” নামে পরিচিত। প্রতি মঙ্গলবার সেখানে হাট বসে। বিভিন্ন ছাত্র গ্রুপের সাথে কথা বলে জেনেছি, হাটের দিনে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা বন্যার্তদের জন্য ফান্ড কালেকশন করবেন। তারা হরিপুরবাসীর প্রতি ঊদার্ত আহবান জানিয়ে বলেছেন,” যার যতটুকু সাম্যর্থ আছে, যত সামান্যই হোক না কেন, সকলেই যেন বন্যার্তদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসি এবং অংশগ্রহণ করি”।